পর্দা নিয়ে এত ঝামেলা এখন পর্যন্ত পোহায়নি আমি, প্রথম যখন নার্সিং এ ভর্তি হলাম তারপর শুনলাম বোরকা এলাও না কলেজে। বাসায় জানালাম কিন্তু আমাকে কিছুদিন দেখায় জন্য বলল। যাইহোক বোরকা, নিক্বাব পরেই প্রথম ক্লাসে গেলাম যেহেতু তখনো আমাদের কোনো ড্রেস দেয়া হয়নি কলেজ থেকে যে যার মত করে ড্রেস পরে যেতো। পর্দা নিয়ে ইসলামিক গল্প
তো একদিন এমন ক্লাসে যাচ্ছি পেছন থেকে প্রিন্সিপাল ম্যামের ডাক পড়ল বোরকা, নিক্বাব নিয়ে যাচ্ছেতাই কথা শোনালো যদিও তখনো ড্রেস দেয়া হয়নি উনার কথা ড্রেস দেয়া হোক আর না হোক বোরকা, নিক্বাব কোনোভাবেই পরা যাবে না বলল বোরকা খুলে ড্রেস পরে ক্লাসে যেতে হবে সেদিনের মত আর ক্লাসে যাওয়া হয়নি, রুমে বসে শুধু কেদেছি বাসায় বলে খুব লাভ হবে না তাও বুঝে গেছিলাম।
আপুদের বোরকা নিয়ে সমস্যাঃ
যাইহোক এর কয়দিন পর সিনিয়র আপুদের ফাইনাল এক্সাম শুরু হলো আপুরা যারা হিজাব করত তারা ড্রেসের সাথে এপ্রোন! হিজাব পরেই ক্লাস করত সেহিসেবে পরীক্ষার হলেও সেভাবেই গেলো! পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণ পর প্রিন্সিপাল ম্যামের আগমন আর হিজাব নিয়ে তান্ডব বাঁধিয়ে দিলো হিজাব পরা যাবেনা! একে একে জোরপূর্বক সকলের হিজাব খুলতে বাধ্য করল এক আপু রীতিমতো অসুস্থ হয়ে গেলো! হিজাব খোলার অসম্মানে আপুর পুরো শরীর কাপছিলো লিখতে পারছিলো না তাতেও প্রিন্সিপালের মন গললো না! তারপর উনি ক্লাস থেকে বেরোবার পর আমাদের অন্য একজন টিচার আপুকে হিজাবটা পরতে দেয়! যাইহোক পরেরদিন আপুরা সবাই হিজাব পরে গিয়ে একরকম নিরব আন্দোলন করে আলহামদুলিল্লাহ আমাদের আপুরা সবাই একজোট ছিলো। ” পর্দা নিয়ে ইসলামিক গল্প”
প্রিন্সিপাল ম্যাম এতেও অনেক বাঁধা দেয় প্রায় আধাঘন্টা আপুদের বাইরে দাড় করিয়ে রাখে সেদিন! একটা বোর্ড পরীক্ষায় আধাঘন্টা নষ্ট হওয়া মানে কি সবাই অবশ্যই আন্দাজ করতে পারছেন সেদিনের পর থেকে এখন আর হিজাব নিয়ে কিছু বলেনা! ঠিকি কিন্তু প্রিন্সিপাল ম্যামের যে হিজাব পরা মেয়েদের একদমই পছন্দ না! তা বুঝতে আমাদের একটুও সমস্যা হয়না🙂 এখানে হিজাব পরা নিয়েই রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয় নিক্বাব পরাতো স্বপ্ন তাও যতটুকু লুকিয়ে! চুরিয়ে পরা যায় পরার ট্রাই করে অনেকে কতটা হীনম্মণ্যতায় যে ভুগতে হয় তা বলে বোঝানো যাবেনা। ” পর্দা নিয়ে ইসলামিক গল্প “
হাসপাতালে নতুন সমস্যাঃ
এটাতো গেলো নার্সিং কলেজের ভেতরকার অবস্থা! এবার আসি হাসপাতালে ওয়ার্ড করার সময় নিক্বাব নিয়ে ঝামেলায় আমাদের সুপারভাইজার স্যার কাউকে নিক্বাব পরা দেখলাই একটা জোরেশোরে ধমক দিয়ে তার নাম,রোল,কোন ইয়ার এটা সুন্দর করে টুকে নিয়ে যান! আর সবসময়ই তোতাপাখির মত আওড়াতে থাকে এতই যখন পর্দা করার শখ তাহলে নার্সিং পড়তে আসছো কেন?? এরকম নাক মুখ ঢাকলে নাকি রোগী ভয় পায়! নিক্বাবের পরিবর্তে মাস্ক পরার অনুমতি চাইছিলো কয়েকটা আপু মুখের উপর মানা করে দিয়েছিলেন তিনি মাস্ক পরলে কথা বুঝা যাবেনা তাই ( বিঃদ্রঃ এটা করোনা পরিস্থিতির আগের ঘটানা)
আমাদের মত কিছু নার্সিং কলেজে তো তাও হিজাব, এপ্রোন পরা যায় কিন্তু অন্যান্য কিছু নার্সিং কলেজে হিজাব! এপ্রোন কোনোটাই পরা যায় আমাদের বোনেরা যারা ইসলামের বুঝসম্পন্ন তাদের যে কি পরিমাণ ভোগান্তির স্বীকার হতে হয় তা হয়ত বলে বোঝানো সম্ভব নয়! কামিজের উপর শুধু ক্রসবেল্ট পরলে কি পরিমাণ বিশ্রী দেখায় তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। পর্দা নিয়ে ইসলামিক গল্প
ভাবা যায় ৯০% মুসলিমের দেশে কিনা মেডিকেল সেক্টরের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ নার্সদের ড্রেসকোডে হিজাবই নেই! অথচ এখানে পড়ুয়া বেশিরভাগই হচ্ছে মুসলিম মেয়ে!! ওরা ড্রেসকোডের নিয়মের দোহাই দিয়ে দিনের পর দিন নার্সিং পড়ুয়া মেয়েদের হেনস্তা করছে। আর কতদিন মুখ বুজে এসব সহ্য করব আমরা? আসলে নিয়ম টিয়ম কিচ্ছু না চাইলেই এরা বোরকা হিজাব পরতে দিতে পারে DGNM থেকে কেউ এসে দেখেনা এসব! এদের মেইন প্রব্লেম ইসলাম নিয়ে নাহয় ড্রেস দেয়ার আগে কেউ যদি বোরকা পরে ক্লাসে যেতে চায় তাকে বাঁধা দিবে কেন?? ইসলাম বিদ্বেষ এখন প্রতিটা জায়গায় জায়গায়।
নামেই মুসলিমপ্রধান দেশ এটি অথচ যারা ইসলাম মেনে চলে তারাই আজ সবচে সংখ্যালঘু,নিপিড়ীত শ্রেণী….
আরও গল্প পড়তে আমাদের ilmuddin – ইলমুদ্দিন পেইজে লাইক দিন।
আরও পড়ুনঃ সকল প্রশংসা আল্লাহর কেন ? আল্লাহ্ কেন পাপ কাজের দায়বার নেয়না।